Edit Content
খুলনা, বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার । ৩১শে জুলাই, ২০২৫ । ১৬ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

প্রাণ ফিরেছে ক্যাম্পাসে, ক্ষতি পোষানোর পরিকল্পনা চান কু‌য়েট শিক্ষার্থীরা

একরামুল হোসেন লিপু

টানা প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে প্রাণ ফিরে পেয়েছে খুলনা প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র ক্যাম্পাস। ক্লাস শুরু হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। নতুন ভিসি’র কাছে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা সাড়ে পাঁচ মাস ক্লাস এবং পরীক্ষা বন্ধ থাকায় যে একাডেমিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তারা সেটা দ্রুত পুষিয়ে পূর্বের ন্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ দ্রুত ফিরিয়ে এনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা করা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি। যাদের ক্লাস আছে তারা ব্যস্ত ক্লাসরুমে। বাকিরা ক্যাম্পাসে বন্ধু বান্ধব-সহপাঠীদের সঙ্গে আড্ডা আর গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর ডাইনিং আগে থেকে চালু ছিল। বাকি ছিল শুধু খানজাহান আলী হলের ডাইনিং। সেটিও আজ থেকে চালু হয়েছে। ক্লাস শুরু হবে এ খবরে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আগেই চলে এসেছে। বাকিরাও সকাল থেকে আসতে শুরু করেছে। ক্লাস শুরু হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের -২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মনিরুন নাহার তাবুসী খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘৫ মাস পর ক্লাস শুরু হওয়ায় মনে হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছি। আজ প্রথম দিন থেকেই আমাদের ক্লাস পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। আমরা প্রত্যাশা রাখি এটা কন্টিনিউ হবে। নতুন ভিসি’র কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, আমাদের যে একাডেমিক লাইফ, এটা যেন স্বাভাবিকভাবে আবার ব্যাক করে। আর ছাত্র-শিক্ষকের মাঝে যে দূরত্ব আছে, সেগুলি যেন তাড়াতাড়ি মিটে যায়। আমরা আশাবাদী খুব শীঘ্রই আমরা আগের অবস্থায় ফিরে যাব ইনশাআল্লাহ’।

কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহি বলেন, ‘অনেকদিন পর আমাদের আজ ক্লাস শুরু হইছে। ক্লাসমেটদের সবাইকে দেখে খুব ভালো লাগতেছে। আমাদের ক্লাসে আজকে একটু উপস্থিতি কম ছিল তারপরও ৫০ শতাংশের মতো উপস্থিতি ছিল। খোঁজখবর নিয়েছি, বাকি যারা আছে, আজ কালকের মধ্যে চলে আসবে।

 

নতুন ভিসি’র কাছে আমাদের প্রত্যাশা, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি যেন আর না হয়, এটা যেন নিশ্চিত করেন। আর ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ, ওটা যেন আরও ভালো হয়, যতটুকু তিনি কাজ করে পারেন’।

ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাফওয়া নাভিদ ইফাজ বলেন, ‘পাঁচ মাস পর আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে, আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা আশাবাদী ভিসি স্যার ক্যাম্পাস খুব সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে পারবেন। আমাদের শিক্ষক সমিতির স্যারেরা যেটা বলেছেন, যারা বিভিন্নভাবে শিক্ষকদের হেনস্থা করেছেন, তাদেরকে বিচারের সম্মুখীন করার একটা দাবি জানিয়েছেন, আমরা চাই, ভিসি স্যার সঠিকভাবে ন্যায়বিচার করবেন। ভিসি স্যারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, ক্যাম্পাসটা যাতে সুন্দরভাবে সচল থাকে, আমাদের সেশনজট বা যে গ্যাপটা হয়ে গেছে, এটা যেভাবে হোক পূরণ করা যায় এবং ক্যাম্পাস যেন আগের মত সুষ্ঠু পরিবেশে ফিরে যেতে পারে সে চেষ্টা করবেন’।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ জাহান দ্বীপ বলেন, ‘দীর্ঘ পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে বাসায় বসা। একটা পরীক্ষা দেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডগোলের কারণে ক্লাস, পরীক্ষা সব বন্ধ হয়ে যায়। একই শিক্ষাবর্ষে অন্যান্য ইউনিভার্সিটির আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের দুইটা সেমিস্টার শেষ হয়ে গেছে। অথচ আমরা কুয়েটে এখনও একটা সেমিস্টার শেষ করতে পারিনি। যতটুকু খবর পেলাম আজকে বিকালের মধ্যে হয়তো পরীক্ষার রুটিনটা পেয়ে যাব। ইতিমধ্যে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। দীর্ঘদিন পর ক্লাস এবং পরীক্ষা শুরু হচ্ছে এতে আমরা খুবই আনন্দিত। নতুন ভিসি স্যারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, অতি দ্রুত সকল সমস্যার সমাধান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনবেন’।

একই বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন আবিদ বলেন, ‘আজ থেকে ক্লাস শুরু হয়েছে। বিকালে হয়তো আমাদের পরীক্ষার রুটিনও পেয়ে যাব। খুবই ভালো লাগতেছে। দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার পর পরীক্ষা দেওয়ার আগ্রহটা অনেক বেড়ে গেছে’।

লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আহসান হাবিব বলেন, দীর্ঘদিন পর ক্লাস খুলেছে খুব ভালো লাগছে, অনেকদিন পর ক্লাসমেটের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রথম দিন ক্লাস করে মনে হলো স্যাররা আমাদের প্রতি খুবই কেয়ারফুল। আমাদের যে লসটা হয়েছে, এটা যেন খুব তাড়াতাড়ি ক্লিয়ার করা যায়। স্যাররা এটা চেষ্টা করবেন। আশা করি আগামী দিনগুলো খুব ভালো যাবে’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর ক্যাম্পাসে আবার ফিরে খুব ভালো লাগছে। ভিসি স্যারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা ক্যাম্পাসে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে আমরা নির্দ্বিধায় ক্লাস করতে পারি। পরবর্তীতে এরকম ঝামেলার সম্মুখীন না হই। আমাদের যে সেশনজটটি হয়েছে এর থেকে যেন আমরা বেরিয়ে আসতে পারি সে চেষ্টা করবেন’।

 

খুলনা গেজেট/এইচ/লিপু




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন